ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর আরও একবার কমে গেছে। বর্তমানে প্রতি ডলারের বিনিময়ে ৮৫ দশমিক ৫৬ রুপি পাওয়া যাচ্ছে, যা রুপির ইতিহাসের সর্বনিম্ন। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডলারের দর ৮৬ রুপিতে পৌঁছানো এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। এ অবস্থায় বিজেপি সরকারকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেনে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দর বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি গত বছরের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
চলতি প্রান্তিকে ভারত থেকে ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগের প্রান্তিকে ভারতে ২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে এবং বন্ডের বিপরীতে অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে।
বিরোধী দলগুলো বিজেপি সরকারকে রুপির দরপতনের জন্য দায়ী করছে। কংগ্রেস নেতা জয় রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ২০১৪ সালের রুপির অবমূল্যায়ন নিয়ে তাঁর বক্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। রমেশ বলেছেন, ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকারের সমালোচনায় মোদি বলেছিলেন, “সংকটের সময় নেতৃত্ব দিশাহীন ও আশাহীন হলে তা আরও গুরুতর আকার নেয়।” অথচ বর্তমানে রুপির দরপতন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই।
২০১৬ সালের ১৬ মে ডলারের দর ছিল ৫৮ দশমিক ৫৮ রুপি। মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে তা ৮৫ রুপির ওপরে চলে গেছে। রমেশ দাবি করেছেন, এশিয়ার মধ্যে ভারতীয় রুপি সবচেয়ে বেশি দরপতনের শিকার হয়েছে।
সোমবার ভারতের মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা ছিল। এক পর্যায়ে ডলার ৮৫ দশমিক ৫৯ রুপিতে উঠে যায়; পরে তা ৮৫ দশমিক ৪৩ রুপিতে নামে। আজ সকালে আবার তা ৮৫ দশমিক ৫৬ রুপিতে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) রুপিকে স্থিতিশীল রাখতে বিদেশি মুদ্রার তহবিল থেকে কোটি কোটি ডলার ব্যবহার করেছে। তবে এর ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। জয় রাম রমেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন, “রুপিকে স্থিতিশীল করতে কত কোটি ডলার ব্যবহার করা হয়েছে?”
রুপির দরপতন নিয়ে বিজেপি সরকারের ভূমিকা ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধী দলগুলো প্রশ্ন তুলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরবিআই ও সরকারের কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।