দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর অবশেষে মুক্তি পাচ্ছেন বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। গত ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন, ফলে বাবর তার বিরুদ্ধে করা সব মামলায় খালাস পান। এখন আর কোনো বাধা নেই তার মুক্তির পথে।
এদিকে, তার মুক্তির খবর পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে জড়ো হয়েছেন। ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, মুক্তির অপেক্ষায় সেখানে ভিড় জমায়। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিন পরে তাদের নেতা মুক্তি পাচ্ছেন, এ কারণে এলাকায় উচ্ছ্বাস ও আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বাবরের মুক্তির পর তাকে কারা ফটক থেকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।
মুক্তির পর তার স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবনী বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর পর আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের জনগণ বাবরের মুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, তিনি এখন জনগণের কাছে ফিরতে প্রস্তুত।”
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান আটক করা হয়। এরপর লুৎফুজ্জামান বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ৭৮ দিন রিমান্ডে রাখা হয়েছিল। তার আইনজীবী জানান, রিমান্ডে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়, যাতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা যায়। পরে আদালত এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তার খালাস দেন।
এছাড়া, ২০১৪ সালে আদালত দুটি মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, তবে ডেথ রেফারেন্সে হাইকোর্টে শুনানি হয় এবং গত বছর থেকে একে একে সব মামলায় তিনি খালাস পান। ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায়ও খালাস পেয়েছিলেন তিনি।
এর আগে, ২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাবর বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন, তবে বর্তমানে তার মুক্তির মধ্য দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি নতুন আশা দেখা দিয়েছে। মির্জা হায়দার আলী, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বলেন, “তার মুক্তির মাধ্যমে ভাটি বাংলার মানুষের স্বপ্ন পূরণের পথ খুলতে যাচ্ছে।”