নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দারা গত এক সপ্তাহ ধরে ডাকাতির ভয়াবহ আতঙ্কে ভুগছেন। রাতে ঘুম ভেঙে এলাকাবাসী মাইকে শোনা ডাকাতির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন, যা তাদের নিরাপত্তার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহে এই উপজেলায় ১০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
রোববার রাত আড়াইটার দিকে, ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগুয়ান্দী এলাকায় হানা দেয়। এই সময়, মন্টুর ছেলে শ্রী জুমন দাস, রুস্তম আলীর ছেলে মামুন, শ্রী বাবু এবং আ. মজিদের ছেলে ডাঃ মান্নানের বাড়িতে একযোগে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে বাসার লোকজনদের জিম্মি করে মারধর করে এবং মান্নানের পরিবারের সদস্য বৃষ্টি আক্তারকে গুরুতর আহত করে। ডাকাতরা নগদ ২ লাখ টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার ও ৬টি মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে চলে যায়।
এর আগে শনিবার রাতেও উচিৎপুরা ইউনিয়নের টেগুরিয়াপাড়া এলাকায় আল আমিনের বাড়িতে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে পুরো পরিবারকে জিম্মি করে নগদ এক লাখ টাকা, সাড়ে চার ভরি স্বর্ণালংকার এবং চারটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মূল্যবান মালপত্র লুটে নেয়।
ডাকাতির এই সিরিজের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানিয়েছেন, পুলিশ প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছে এবং ইতিমধ্যে একজন ডাকাতকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে বাকী ঘটনাগুলোর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল জানান, ওসি বদলির সুযোগে ডাকাতি বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে পুলিশ এই বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং আশাবাদী যে, শিগগিরই ডাকাতির ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে।
বাড়ির মালিকেরা এবং স্থানীয়রা ডাকাতির হাত থেকে বাঁচতে রাতভর পাহারা দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে ডাকাতির ভয়াল দৃশ্য তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
অঞ্চলে অপরাধ বৃদ্ধির কারণে, স্থানীয়রা নিরাপত্তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। পুলিশের আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ডাকাতির ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব বলে তারা মনে করেন। তবে, এলাকায় সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ডাকাতি প্রতিরোধে প্রশাসনের আরও কার্যকরী পদক্ষেপ জরুরি।
আড়াইহাজারের বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সবাই একযোগে কার্যকরী উদ্যোগ আশা করছেন, যাতে তারা তাদের বাড়িঘর নিরাপদ রাখতে পারেন।