1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সারা দেশে টানা বৃষ্টি, বাড়ছে অতি ভারি বর্ষণের শঙ্কা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ কালীগঞ্জে শতবর্ষী গাছ উপড়ে ভবনের উপর, আগুনে আহত ১ আগামীকাল জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা’ ঘোষণা নেছারাবাদের শতবর্ষী পেয়ারা বাগানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য: লাউডস্পিকার জব্দ দিনাজপুরের কাহারোলে নিষিদ্ধ ঘোষিত দুই ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার জামালপুরে যুবসমাজের প্রতিবাদ—শুভ পাঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি খুলনার দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা, প্রাক্তন স্বামীর ওপর সন্দেহের তীর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টেক্সওয়ার্ল্ড অ্যাপারেল মেলা ২০২৫-এ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্ভাবনের প্রদর্শনী দেখাল ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯

গুম ও নির্যাতনের ঘটনা এখন আর গুজব নয়, বাস্তবতা

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
আয়না-ঘর

বাংলাদেশে গুম ও ভয়াবহ নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ এবার স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে একটি তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ: এ স্ট্রাকচারাল ডায়াগনসিস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স ইন বাংলাদেশ’-এ। সেখানে ২৫৩ জন গুম হওয়া ব্যক্তির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, কেউ ৩৯ দিন, কেউবা ৩৯১ দিন পর্যন্ত বন্দি ছিলেন গোপন টর্চার সেলে। কারও হাত-পা বেঁধে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছে, আবার কাউকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রে নির্যাতন ছিল আরও বেশি অপমানজনক—ওড়না খুলে রাখা, জানালার সামনে ঝুলিয়ে রাখা, এমনকি পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন চাওয়া নিয়ে কটূক্তি করাও ছিল এই নির্যাতনের অংশ।

প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে র‍্যাব-২, র‍্যাব-১০, সিপিসি-৩, এবং সিটিটিসি-র ভূমিকাকে। অভিযোগ রয়েছে, এসব বাহিনীর নির্দিষ্ট ইউনিটগুলো সাউন্ডপ্রুফ রুম, ঘূর্ণায়মান চেয়ার, পুলি সিস্টেম ও ওয়াটারবোর্ডিংয়ের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্দিদের ওপর দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছে।

শুধু ভুক্তভোগী নয়, তাদের পরিবারগুলোর জীবনও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ে। সামাজিকভাবে নিঃসঙ্গতা, অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস, সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া—সব মিলিয়ে গুম কেবল একজন ব্যক্তির নয়, গোটা পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছে।

প্রতিবেদনের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক অংশ নারীদের অভিজ্ঞতা। এক নারী জানান, তাকে ক্রুশের মতো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। জানালার পাশে ঝুলে থাকার সময় বাহিনীর সদস্যরা ব্যঙ্গ করে বলতো, ‘এমন পর্দা করছিল, এখন সব পর্দা খুলে গেছে।’ নারীরা অনেক সময় স্যানিটারি প্যাড চাইলে সেটাকেও হাসির বিষয় বানানো হতো।

শুধু নির্যাতন নয়, টর্চার সেলের অবস্থাও ছিল ভয়ঙ্কর। ঘরগুলো ছোট ও সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত। টয়লেট ব্যবহার করতে হতো প্রকাশ্যে, শোয়ার জায়গায় পড়ে থাকতো ময়লা ও বর্জ্য। খাবার ছিল অনিরাপদ, ঘুমাতে দেওয়া হতো না, ঠান্ডায় কাঁপতে হতো কম্বল ছাড়া।

২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত গুম কমিশন বলেছে, বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাদের মতে, এই প্রবণতা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে একটি পরিকল্পিত ব্যবস্থা হিসেবে রূপ নিয়েছে। সঠিক বিচার ও জবাবদিহিতা ছাড়া এই পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে গুম ও নির্যাতনের ঘটনা এখন আর গুজব নয়, বাস্তবতা। এই ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, শক্তিশালী বিচারিক তদন্ত ও আন্তর্জাতিক নজরদারি প্রয়োজন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট