
বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে সরকার। দেশে ও বিদেশে মোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সংযুক্ত ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশের ভেতরে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা এবং বিদেশে ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি শনাক্ত করে সংযুক্ত ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।
সভায় বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদ উদ্ধার কার্যক্রম আরও দক্ষ ও কার্যকর করতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর কিছু ধারা যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ১১টি গুরুত্বপূর্ণ কেস নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এসব কেসে ইতোমধ্যে ১০৪টি মামলা দায়ের, ১৪টি মামলায় চার্জশিট দাখিল এবং ৪টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এই ১১টি অগ্রাধিকার কেসের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে ২১টি এমএলএআর (Mutual Legal Assistance Request) পাঠানো হয়েছে। দ্রুত চার্জশিট দাখিল, এমএলএআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং মামলা নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি) কর্তৃক আগামী ২০২৭-২৮ মেয়াদে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্থ দফা মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন পরিচালিত হবে। এ মূল্যায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক), অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, সিআইডি প্রধানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ ও বিএফআইইউ’র প্রতিনিধিরা।