যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ বাংলাদেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এই চাহিদা পূরণে শেভরন আরও বিনিয়োগ করবে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) শেভরনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ক্যাসসোলুর নেতৃত্বে কোম্পানির একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে ক্যাসসোলু বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে, যা দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে নতুন কূপ খননের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। শেভরন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা দেশজুড়ে গ্যাসের নতুন মজুদ অনুসন্ধান করবে এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শেভরনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকার স্থানীয় কোম্পানিগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। আমরা এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। তাই দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধান প্রধান বহুজাতিক সংস্থাগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে, যা দেশের উন্নয়নে সহায়ক হবে।’’
এছাড়া, শেভরনের স্থানীয় জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেছেন ইউনূস। তিনি বলেন, ‘‘শেভরন সবসময় স্থানীয় জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে, এবং তাদের এই উদ্যোগকে আমরা সবসময় সমর্থন জানাই।’’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, যিনি জানান, ‘‘আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে শেভরনের যাবতীয় বকেয়া পরিশোধ করার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ উল্লেখ্য, শেভরন ও পেট্রোবাংলার মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মাধ্যমে শেভরনের বকেয়া পরিশোধ শুরু হয়েছে, এবং আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ সম্পন্ন হবে।
এদিকে, শেভরনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা আগের শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে শত শত মিলিয়ন ডলার বকেয়া অপরিশোধিত রাখার বিষয়টি নিয়ে খুশি হয়েছেন, এবং বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার বকেয়া পরিশোধ শুরু করায় তারা সন্তুষ্ট।
সর্বশেষ, শেভরন বাংলাদেশের গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে আরও বিনিয়োগ করতে চায়, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।