মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার রজতরেখা নদীতে প্রকাশ্যে ড্রেজার বসিয়ে মাটি লুট করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। গত ১৫ দিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি যশলং ইউনিয়ন পরিষদের তহসিলদার (ভূমি কর্মকর্তা) রফিকুল ইসলামকে বারবার জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টঙ্গিবাড়ী ও সদর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত রজতরেখা নদীর টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ছোট কেওয়ার এলাকায় প্রকাশ্যে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটছেন ছোট কেওয়ার গ্রামের শাহালম ও ধীপুর গ্রামের মাসুম মেম্বার। স্থানীয়দের দাবি, সরকারি নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত এই মাটি ছোট কেওয়ার গ্রামে একটি পুকুর ভরাটের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
ড্রেজারের এক শ্রমিক নেত্রকোনা জেলার মুন্না জানান, মাসুম মেম্বার ও শাহালম মিলে খালের মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন। তবে এই মাটি কাটার কোনো অনুমতি আছে কিনা, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
অভিযুক্ত শাহালম ও মাসুম মেম্বার উভয়েই স্বীকার করেছেন যে, তারা অনুমতি ছাড়াই মাটি কাটছেন। মাসুম মেম্বার বলেন, শাহালম তার আত্মীয়, তাই ড্রেজার দিয়ে তাকে মাটি কেটে দিচ্ছেন। তিনি স্বীকার করেন যে, মাটি কাটার কোনো সরকারি অনুমতি নেই।
এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ করার পরও স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কোনো ব্যবস্থা নেননি। তিনি জানান, তিনি বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ওয়াজেদ ওয়াসীফকে অবগত করেছেন এবং তিনিই ব্যবস্থা নেবেন। তবে এক সপ্তাহ ধরে একই কথা বলে আসছেন ভূমি কর্মকর্তা, কিন্তু এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ওয়াজেদ ওয়াসীফ বলেন, তিনি এই বিষয়ে আজই (২৯ জানুয়ারি ২০২৫) জানতে পেরেছেন এবং স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তাকে মাটি কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সরকারি নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাসুম মেম্বারের বিরুদ্ধে আগেও সরকারি খাল থেকে মাটি কাটার অভিযোগ ছিল এবং তাকে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাতেও তিনি থেমে থাকেননি। স্থানীয়রা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড রোধ করা যায়।