মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ কোন অবস্থাতেই মাংস ও ডিম আমদানি করতে চায় না। আমদানির ফলে দেশে সংক্রামক রোগ, বিশেষ করে জুনোটিক ডিজিজ প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা জানান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গরুর মাংসের দাম কমানোর জন্য আমদানি করার অনুরোধ জানিয়ে থাকেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, এভাবে আমদানি চালু হলে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত এবং খামার ধ্বংসের মুখে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মাংস ও ডিম আমদানি করতে চায়। তবে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নেওয়া হয়, সে লক্ষ্যে দ্রুতই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।
খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদখাতে নতুন ব্যাংক স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “কৃষি ব্যাংকের আদলে আমরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক গঠন করতে চাই। এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হলে খামারিরা সহজে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন, যা একদিকে আমদানি নির্ভরতা কমাবে এবং অন্যদিকে প্রাণিসম্পদখাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করবে।”
উপদেষ্টা আরও জানান, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারকে সহযোগিতা এবং পুনর্বাসনের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি নতুন অধিদপ্তর গঠনের কাজ চলছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদেরও তিনি এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ও পিপিআর রোগ নির্মূলে ভ্যাকসিন কার্যক্রম সম্প্রসারণের নির্দেশনা দেন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এসব রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে এই মতবিনিময় সভায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, বিভাগীয় পরিচালকবৃন্দ এবং দেশের ৬৪ জেলার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত শক্তিশালী হবে এবং দেশীয় খামারিরা আরও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।