পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে প্রায় ২ কোটি টাকার ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর গরমিলের সত্যতা পাওয়ায় ৪ চিকিৎসক, স্টোর কিপার ও ৪ সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ শেখ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান, সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ও সার্ভে কমিটির সভাপতি ডা. ফরাহানা রহমান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. সুরঞ্জিত কুমার সাহা, হাসপাতালের স্টোর কিপার মো. আল আমীন গাজী, ওষুধ সরবরাহকারী: এস এম সামসুল আরেফীন (নাজিরপুর), মো. হানিফুল ইসলাম (ঢাকা), মো. জহিরুল ইসলাম (যশোর), মো. রাশেদুজ্জামান এরশাদ (গোপালগঞ্জ)।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের জন্য ৪টি প্রতিষ্ঠান ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের চুক্তিবদ্ধ হয়। হাসপাতালের সার্ভে কমিটির সভাপতি ও দুই সদস্য সরবরাহকৃত ১ কোটি ৭৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৭ টাকার ওষুধ ও সামগ্রী বুঝে নিয়ে অর্থ পরিশোধ করেন।
কিন্তু দুদকের তদন্তে দেখা যায়, স্টক রেজিস্টারে ওষুধ ও সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত থাকলেও প্রকৃতপক্ষে স্টোরে সেগুলো পাওয়া যায়নি।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ২৭ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে এই অনিয়মের প্রমাণ পায়। পরে ২ ফেব্রুয়ারি আসামিরা প্রতারণামূলকভাবে ১টি ট্রাকে ওষুধ এনে ঘাটতি সমন্বয়ের চেষ্টা করেন। দুদক একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ট্রাকটি আটক করে।
এসব অপরাধের অভিযোগে দুদক ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করে। তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে দুদক।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, মামলার বিষয়ে তিনি এখনো অবগত নন। তবে তদন্তে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশা করেন।