
দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কর্মীদের উৎসাহ বোনাস প্রদানে কঠোর নতুন শর্ত আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক প্রকৃত আয়–ব্যয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে না পারলে আর কর্মীদের বোনাস দেওয়া যাবে না।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকিং খাতে বহু প্রতিষ্ঠান মিথ্যা আয় বা কৃত্রিম মুনাফা দেখিয়ে কর্মীদের বোনাস প্রদান করছে। এ ধরনের কার্যক্রম আর্থিক সুশাসনের পরিপন্থী এবং সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
নতুন নির্দেশনায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে— যেসব ব্যাংকের মধ্যে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো থাকবে, তারা উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না— মূলধন ঘাটতি, নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ঘাটতি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া বিলম্বিত ছাড় সুবিধা (Deferred Facility), কৃত্রিম মুনাফা বা পুঞ্জীভূত মুনাফা ব্যবহার, শ্রেণিকৃত বা অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকা অর্থাৎ, কোনো ব্যাংক প্রকৃত অর্থে আর্থিকভাবে শক্তিশালী না হলে উৎসাহ বোনাসের সুযোগ থাকবে না।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অনেক ব্যাংক বছরের শেষে বোনাস দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে কৃত্রিম মুনাফা দেখায়। আবার কেউ কেউ বিলম্বিত ছাড় সুবিধা নিয়ে লাভ যোগ করত। নতুন শর্তে এসব ব্যাংকের বোনাস কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বোনাস প্রদানের জন্য শুধু নিট মুনাফাই নয়, ব্যাংকিং সূচকে বাস্তব উন্নতি থাকতে হবে। যেমন— খেলাপি ঋণ আদায়ে অগ্রগতি, রেগুলেটরি ক্যাপিটাল পূরণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় উন্নতি, এসব না থাকলে বোনাসের অনুমতি মিলবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ২০২৫ সালের— ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীদের ইনসেনটিভ বোনাস নির্দেশিকা’ মানতে বাধ্য করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী— শুধুমাত্র বাস্তবিকভাবে আর্থিকভাবে ভালো করা ব্যাংকগুলোই কর্মীদের উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে। ফলে সুশাসন বজায় রাখা ব্যাংকগুলোই উপকৃত হবে।