মানবিক সহায়তার বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁটের কারণে ২০২৫ সালে বিশ্বজুড়ে ১ কোটিরও বেশি শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত মানুষ চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর (UNHCR) জানিয়েছে, বাজেট ঘাটতির কারণে খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০২৪ সালে সংস্থাটি যে সংখ্যক শরণার্থীকে সহায়তা করেছিল, চলতি সংকটে সেই সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষও সহায়তা পাবে না।
সংস্থাটির প্রধান বহিঃসম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তা ডমিনিক হাইড বলেন, “আমরা এখন এক মরণঘাতী ককটেলের মুখোমুখি—উর্ধ্বমুখী বাস্তুচ্যুতি, ক্রমাগত বাজেট কমে যাওয়া এবং রাজনৈতিক উদাসীনতা।”
এ বছর ইউএনএইচসিআর-এর প্রয়োজনীয় বাজেট ছিল ১০.৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু জুলাই পর্যন্ত তারা মাত্র ২৩ শতাংশ অর্থ পেয়েছে। ফলে ১.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জরুরি কার্যক্রম বাতিল বা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি।
সংকটের ভয়াবহ চিত্র, বাংলাদেশ: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু শিক্ষার ঝুঁকিতে। চাদ ও দক্ষিণ সুদান: পুষ্টি কার্যক্রম স্থগিত ও নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর বন্ধ। লেবানন: পুরো স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলতি বছরের শেষে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সুদান: যুদ্ধপীড়িত শরণার্থীদের পুষ্টিহীনতার হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
এছাড়া অর্থ সংকটের কারণে ইউএনএইচসিআর গত মাসে ঘোষণা দিয়েছে যে তারা তাদের বৈশ্বিক কর্মী বাহিনীর এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩৫০০ জন কর্মী ছাঁটাই করবে।
এই সংকটের কারণে লাখো পরিবার এখন চরম মানবিক চাপে রয়েছে। কোথাও খাবার ও ওষুধের মধ্যে বেছে নিতে হচ্ছে, কোথাও বাসাভাড়ার খরচ চালাতে না পেরে গৃহহীন হয়ে পড়ছে পরিবারগুলো।
জাতিসংঘের এই সতর্কতা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। দ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিত না হলে বিশ্বজুড়ে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে লাখো শরণার্থী।