দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। শনিবার (২১ জুন) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রবিবার (২২ জুন) সকালে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় গিয়ে এ মামলা দায়ের করবেন।
৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে। নির্বাচনের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
বিএনপির অভিযোগ, সেদিন মানুষ নয়, কিছু কুকুরকেই ভোটকেন্দ্রে দেখা গেছে।
বিএনপির ভাষায়, এটি ছিল ‘দিনের ভোট রাতে দেওয়ার’ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশ নিলেও দুপুরেই নির্বাচন বর্জন করে। জামায়াতের ২২ প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরবর্তীতে তারা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেন। সিইসি ছিলেন: কে এম নুরুল হুদা কমিশনাররা ছিলেন: রফিকুল ইসলাম, মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী
এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। দলটির অভিযোগ, এটি ছিল ‘আমি, তুমি আর ডামি নির্বাচন’। সিইসি ছিলেন: কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনাররা ছিলেন: মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান
গত ১৬ জুন, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন কমিশনগুলোর ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে জড়িত সাবেক সিইসি, কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের তদন্ত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন। বিএনপির অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনে তারা বারবার নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট ও সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও কমিশনগুলো তা উপেক্ষা করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে নির্বাচন করেছে এবং নির্বাচন কমিশন তাদের সহযোগিতা করেছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, এমন দাবিও বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সময়ে করেছেন।
বর্তমানে বিএনপি আগের নির্বাচনের সিইসি ও কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে আইনি পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।