ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে একযোগে ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে জোর করে পুশইন করেছে। বুধবার (৭ মে) ভোরে এ পুশইনের ঘটনা ঘটে। পুশইনকৃতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তারা নিজেদের ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে গোমতী ইউনিয়নের শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন এবং পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ২৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা ব্যক্তিরা হাজীপাড়া গ্রামের আবুল মাস্টারের বাড়িতে আশ্রয় নিলে বিজিবি তাদের আটক করে।
আটককৃতরা জানান, গুজরাট থেকে ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে বিমান ও ট্রেনে করে ত্রিপুরায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিএসএফ তাদের অস্ত্রের মুখে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এই ঘটনায় সীমান্ত এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
বিজিবির ৪০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক জানান, বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে আটক ভারতীয় নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ লক্ষ্যে বুধবার বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে আরেকটি বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসনিকভাবে এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, আটককৃতদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসন কাজ করছে। যতদিন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হয়, ততদিন বিজিবির সমন্বয়ে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, ২৯ এপ্রিল গুজরাটে বাংলাদেশি সন্দেহে সাড়ে ৬ হাজার ব্যক্তিকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, আটককৃতদের মধ্য থেকেই এদের একাংশকে ত্রিপুরা রাজ্যে এনে বাংলাদেশে পুশ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এই ঘটনার পর রামগড়, মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি ও ফটিকছড়ি সীমান্তে বিজিবির টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তবর্তী জনগণও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানাচ্ছে।