শুধু বাজেট বরাদ্দ নয়, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় পর্যায়ে বড় ধরনের সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ কম থাকায় সমালোচনা হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত অর্থও পুরোপুরি খরচ করতে পারে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো। সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজন প্রকল্পভিত্তিক মনিটরিং এবং ইভ্যালুয়েশন।
শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের আ ব ম ফারুক কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত “২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট সংস্কারের রূপরেখা” শীর্ষক এক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস রিসার্চ ব্যুরো।
আলোচনায় বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহমুদ ওসমান ইমাম, অর্থনীতিবিদ সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক ওয়াসিক সাদিক খান। সঞ্চালনায় ছিলেন ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর পরিচালক এবিএম শহীদুল হক।
অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “প্রতি বছর বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতকে অবহেলা করা হয়। অথচ মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, দরিদ্র জনগণের জন্য ন্যূনতম ভাতা বৃদ্ধি না করলে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়। শহরের বস্তিবাসী এবং কর্মহীন জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাজেট বাস্তবায়নের গতি ধীর কেন—তা প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে বিশ্লেষণ করে উপস্থাপন করতে হবে। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে করজাল বাড়ানো সম্ভব।”
ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, “কোন খাতে কেন বরাদ্দ দিচ্ছি সেটি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। বাজেটের যে অংশ অব্যবহৃত থাকে, সেটি অন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে পুনর্বিন্যাস করা উচিত।”
পরিচালক এবিএম শহীদুল হক বলেন, “বাজেট বরাদ্দ নিয়ে যত কথা বলা হোক, বাস্তবায়নে সংস্কার না আনলে কার্যকর পরিবর্তন সম্ভব নয়। প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কার করাও অত্যন্ত জরুরি।”
বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া খাতগুলোর সুপারিশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ অক্ষুণ্ন রাখা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দক্ষতা উন্নয়ন ট্রেনিং বাড়ানো, গ্রামীণ অর্থনীতিতে কুটির শিল্পে প্রণোদনা, কর আদায়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও কর মেলা বৃদ্ধি, শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।