
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার দশটি ইউনিয়নের ফসলের মাঠজুড়ে এখন কেবল সোনালী ধানের শীষ। অনুকূল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবারের আমন মৌসুমে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। ভালো দাম পেলে তারা এ বছর লাভবান হবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোট ২৩ হাজার ৯৩৪ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৪ হেক্টর বেশি। ইতোমধ্যে প্রায় ৯৮৮ হেক্টর জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন জাতের আমনের মধ্যে উফশি জাতের আমন ১৮ হাজার ৪৩৪ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ধান ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৩৫৯ মেট্রিক টন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের কাদেরের মোড় এলাকার কৃষক হৃদয় বলেন, “বর্ষার শুরুতে বৃষ্টি না থাকায় স্যালো মেশিন দিয়ে তিন বিঘা জমিতে ধান লাগাই। পরে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় আরও তিন বিঘা জমিতে চাষ করি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পেলে আগের বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব।”
সোনাহার ইউনিয়নের চাষি সবুজ বলেন, “শুরুতে পানির অভাবে ধান রোপণে সমস্যা হলেও পরে বৃষ্টি আসায় সব ঠিক হয়ে যায়। এবার বিঘায় ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান পাবো বলে আশা করছি। শুনছি বাজারেও দাম ভালো, লাভবান হবো ইনশাআল্লাহ।”
দন্ডপাল ইউনিয়নের ডাকাইয়া পাড়ার কৃষক ফজলু জানান, “প্রতি বছর বর্ষার পানিতে ধান আবাদ করি। এবার খরার কারণে স্যালো মেশিনে সেচ দিয়েছি। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সব ধান ঘরে তুলবো। বাজার দর ভালো থাকলে ভালো লাভ হবে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাইম মোর্শেদ বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের ফলন বাম্পার হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের রোগবালাই দমন ও সঠিক সময়ে কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ভালো ফলনে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।”