কুষ্টিয়ায় নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে তার চেম্বার থেকে টেনে-হিঁচড়ে সড়কে এনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ মে) দুপুরে শহরের লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা ৬-৭ জন নারী শারমিন সুলতানাকে তার চেম্বারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণ করেন। তাকে চেম্বার থেকে টেনে সড়কে এনে প্রকাশ্যে মারধর করেন তারা।
হামলার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নারীরা তাকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় এনে আঘাত করছেন এবং নানা অভিযোগ করছেন।
তাদের দাবি, শারমিন সুলতানা পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়েছিলেন কিন্তু চাকরি বা টাকা ফেরত কিছুই দেননি।
হামলার পর ঘটনাস্থলে আসা শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসুদ রানা বলেন, “আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি আজ চেম্বারে যাওয়ার আগে সেন্টারের মালিক তাকে ফোনে ডেকে নেয়। সেখানে গিয়ে দেখেন, হামলাকারীরা আগে থেকেই অবস্থান করছে।”
তিনি দাবি করেন, স্ত্রীকে মারধরের সময় তাকে আটকাতে গেলে তার ওপরও হামলার চেষ্টা করা হয়। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “হামলার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে এবং কোনো লিখিত অভিযোগ বা কাগজপত্র আছে কি-না তা যাচাই করা হচ্ছে।”
রাতে থানায় উপস্থিত হন স্থানীয় চিকিৎসকরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা চিকিৎসকদের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ ও জনসমক্ষে চিকিৎসককে লাঞ্ছনার ঘটনায় জনমনে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সমাজে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসক সমাজ।