সাবেক সংসদ সদস্য ও আলোচিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সামনে আরও অস্থিরতা তৈরি হবে। তার মতে, এই ঘোলাটে রাজনীতিতে সবচেয়ে আগে বিপদে পড়বে জামায়াতে ইসলামি এবং এরপর বিএনপি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ২০২৮ সালের আগে দেশে কোনো জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে রনি বলেন, বর্তমান সংস্কার উদ্যোগগুলো মূলত “অশ্বডিম্ব”, যার বাস্তবায়ন বাংলাদেশি বাস্তবতায় অসম্ভব। এসব পরিকল্পনা কেবল অর্থ ও সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি আরও বলেন, এসব সংস্কারে কেউ আমেরিকার মডেল অনুসরণ করেছে, আবার কেউ ভারতের, যার ফলে বাস্তবতা উপেক্ষিত হচ্ছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে গোলাম মাওলা রনি স্পষ্ট করে বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেও জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। ২০২৬ সালেও নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই তিনি মনে করেন। হয়তো ২০২৭ সালে কিছু সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, তবে নিশ্চিতভাবে ২০২৮ সালেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেটাও নির্ভর করছে রাজনৈতিক ‘খেলোয়াড়দের’ নতুন সেট তৈরির ওপর।
তিনি বলেন, “এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবসম্মত নয়। রাজনীতির ময়দান ক্ষমা করে না। বর্তমান সরকার আমলে যারা নিগৃহীত হয়েছেন, তারা পরবর্তীতে ক্ষমতায় এলে এর প্রতিশোধ নেবেন—এটাই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা।”
জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ধর্মীয় নানা ইস্যুতে যেসব ঘটনা ঘটছে, তার দায় জামায়াতের ঘাড়ে চাপছে, যদিও তারা সেসব ঘটনায় জড়িত নয়। এর ফলে সবার আগে জামায়াত বিপদে পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আওয়ামী লীগের লোকজন চাঁদাবাজি করলেও এর দায়ও বিএনপির ওপর পড়ছে। এই পরিস্থিতি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর বের হওয়ার কোনো পথ নেই, যতক্ষণ না নতুন নেতৃত্ব উঠে আসে।”
গোলাম মাওলা রনির বিশ্লেষণে দেশের রাজনীতির এক গভীর সংকট ও দীর্ঘ মেয়াদি অস্থিরতার আশঙ্কা ফুটে ওঠে। তিনি মনে করেন, বর্তমান ঘূর্ণিপাকে রাজনৈতিক দলগুলো এক ধরনের দিশাহীনতায় ভুগছে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বিন্যাস ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।