
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসনে কেন্দ্রঘোষিত জামায়াতে ইসলামী মনোনীত একক প্রার্থী হিসেবে মাসুদ সাঈদী নির্বাচনী মাঠে নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটারদের মন জয় করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন খোশ আমেজে, কিন্তু বিএনপি বা জোটের প্রার্থী এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে চুড়ান্ত না হওয়ায় একাধিক প্রার্থীরা প্রচার প্রচারনা চালালে ও আছেন দ্বিধাদ্বন্দে, নেতা-কর্মী, সমর্থক-ভোটাররা আছেন অস্বস্তিতে। ফলে বিএনপি’র প্রার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার সমূখীন হচ্ছেন।
নেতা-কর্মী,ভোটার-সমর্থকেরা কেউ কেউ বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারনা চালালেও অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা আছেন দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। দল যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষ হয়ে কাজ করবেন। সে হিসেবে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী,নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধোঁয়াশা বিরাজ করছে। পিরোজপুর-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছেন তারা হলেন-
মাসুদ সাঈদীঃ পিরোজপুর-১ আসনে সাবেক একাধিকবারের সংসদ সদস্য, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সুযোগ্য পুত্র, সাবেক সফল উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি জেলা জামায়াতের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি রুটিন মাফিক (পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী ও নাজিরপুর নিয়ে গঠিত) পিরোজপুর-১ আসনের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্বাচনী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, কর্মীসভা, ভোটকেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকান্ড ও জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এমনকি তার অবর্তমানে জেলা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা সমানভাবে প্রচারণার ধারা অব্যাহত রেখে নির্বাচনী মাঠ নিজেদের দখলে রেখেছেন।
মোস্তফা জামাল হায়দারঃ সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর প্রধান সমন্বয়ক এবং ১২ দলীয় জোট প্রধান হওয়ায় বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুর-১ আসনে তার নাম বেশি শোনা যাচ্ছে। তিনি পথসভা, সভা-সমাবেশ, গণসংযোগসহ প্রচার প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। বিএনপির জেলা ও উপজেলা কমিটি এবং অংগ সংগঠনের একটি অংশ ইতিমধ্যেই মোস্তফা জামাল হায়দারের পক্ষে কাজ শুরু করেছেন। তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন এবং তাকে নির্বাচিত করার আহবান জানাচ্ছেন।
অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনঃ বিতর্কে বিলুপ্ত পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহবায়ক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সদ্য আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ৫ আগষ্টের পর থেকে পিরোজপুর-১ আসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপির একটি অংশের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা তাকে প্রার্থী হিসেবে পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন।
এলিজা জামানঃ পিরোজপুর জেলা বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বেগম এলিজা জামান সম্ভাব্য প্রাথী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন।
নজরুল ইসলাম খানঃ পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক ও নাজিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খানের নামও সম্ভাব্য প্রাথী হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি জেলা কমিটির আহবায়ক হওয়ায় তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও কম নয়। তিনি ব্যাপকভাবে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন।
হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খানঃ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক পিরোজপুরের রাজনীতিতে নবাগত হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খান নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন ও প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর আলম দুলালঃ কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম দুলাল সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে রেখে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন।
আলাউদ্দিন খানঃ কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা আলাউদ্দিন খান সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এছাড়া এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ বা অন্য কোন দলের প্রার্থী হিসেবে কেউ আত্মপ্রকাশ বা প্রচার- প্রচারণা চালানো শুরু করেননি। উল্লেখ্য যে, পিরোজপুর-১ আসনের ৩টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট নাজিরপুরে হওয়ায় নাজিরপুরবাসীর প্রার্থী বাছাই ও ভোটদানে গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া মোট ভোটারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ হিন্দু ভোটার থাকায় এবং আওয়ামী লীগ থেকে কোন প্রার্থী না থাকায় ভোটারদের মন যোগাতে উল্লেখিত প্রার্থীদের দলীয় ও ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।