নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার (৯ মে) সকাল ১০টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় দেওভোগ এলাকায় তার বাড়িতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। এলাকাবাসী খবর পেয়ে বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেয় এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে প্রায় ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আইভী বলেন, “আমি জানি না কেন আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো। আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে বলা হলেও দেখানো হয়নি। যদি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলা অপরাধ হয়, তবে আমি সেই অপরাধেই অপরাধী হতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কোনো চাঁদাবাজি, কোনো হত্যা বা জুলুমে জড়িত ছিলাম না। তাহলে এই ষড়যন্ত্র কার স্বার্থে?”
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান জানান, “সেলিনা হায়াৎ আইভী হত্যা মামলার ১২ নম্বর আসামি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানি হবে ২৬ মে।”
২০২৪ সালের ২০ জুলাই আদমজীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম নিহত হন। তার ভাই নাজমুল হক ২৩ সেপ্টেম্বর ১৩২ জনের নামসহ আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলাতেই আইভীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইভীর গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মসজিদের মাইক ব্যবহার করে খবর ছড়িয়ে দিলে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশি অভিযান প্রতিহত করার চেষ্টা করেন তারা।
স্থানীয়রা RT BD News-কে বলেন, “আইভী একজন সৎ ও নিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ। তিনি ও তার বাবা নগরপিতা আলী আহাম্মদ চুনকা সবসময় স্বচ্ছ রাজনীতির পথেই হেঁটেছেন।”
আইভীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রেপ্তারের সময় তার প্রতিক্রিয়া নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনা ও জনমত তৈরি করছে।