বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই দেশ কোনো ফ্যাসিস্ট শাসকের নয়, এই দেশ দানব ও রক্তপিপাসুদের নয়। দেশের ছাত্র ও জনগণ প্রাণ দিয়ে তা প্রমাণ করেছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত শোক র্যালি পূর্ববর্তী এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাইরে থাকা মানেই শেখ হাসিনার জন্য বিপদ, আর দেশের মানুষের জন্য মুক্তি। এ কারণেই তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজকের ছাত্র আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করে দিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন—ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনই হবে গণতন্ত্রের শেষ ও চূড়ান্ত খেলা।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ও তাদের ‘মার্চ ফর গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি শুনেই শেখ হাসিনা আতঙ্কিত হয়ে তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, যারা গোপালগঞ্জে যাবে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। এ কারণেই এনসিপির ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হবে। কিন্তু এই লড়াইয়ের মাঝেও বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিএনপিকে টার্গেট করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ১০ হাজার মাইল দূরে থাকা তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, অথচ সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হচ্ছে না।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র, শান্তি কিংবা বাকস্বাধীনতা চান না। তিনি রক্ত, রাজত্ব ও লাশ চান। বাংলাদেশকে সোনার খনি মনে করে তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। আজ ইঁদুরের গর্ত থেকেও শেখ হাসিনার দুর্নীতির প্রমাণ বেরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে সোনার ছেলেরা সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষকে ভাতের অধিকার না দিয়ে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। কিন্তু মানুষ আর ভয় পায় না। তারা জানে কিভাবে রক্ত দিয়ে বাঁচতে হয়, আর প্রয়োজনে রক্ত নিতে হয়। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। তিনি সবাইকে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। এছাড়াও বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, জেলা আহ্বায়ক আবুল হোসেন, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।