সুপার লিগের নতুন পরিকল্পনাকারীরা ইউরোপের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও উয়েফার কাছে তাঁদের প্রস্তাবিত নতুন প্রতিযোগিতা ‘ইউনিফাই লিগ’-এর স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। ইউরোপের শীর্ষ আদালতের (ইসিজে) রায়ের ভিত্তিতে এই প্রতিযোগিতার নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মাদ্রিদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট।
নতুন প্রস্তাবিত লিগে মোট ৯৬টি দলকে চারটি লিগে ভাগ করে সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। লিগ শেষে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব থেকে শুরু হবে নকআউট পর্ব। পাশাপাশি, এ লিগের ম্যাচগুলো সরাসরি ফ্রি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সম্প্রচার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী বার্নড রাইকার্ট বলেছেন, সমর্থকদের উচ্চ সাবস্ক্রিপশন খরচ, ঠাসা সূচির কারণে খেলোয়াড়দের ভোগান্তি, মেয়েদের ফুটবলে বিনিয়োগের ঘাটতি এবং ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ফরম্যাট নিয়ে ক্লাব ও সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই নতুন এই লিগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে সুপার লিগ চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর উয়েফা এবং সমর্থকদের বিরোধিতার মুখে তা ভেস্তে যায়। উয়েফা তখন সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী ক্লাব ও খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিল। তবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা শুরু থেকেই এই প্রকল্পকে সমর্থন দিয়ে আসছিল।
২০২৩ সালে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে) রায় দেন, উয়েফার এ ধরনের পদক্ষেপ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) আইন লঙ্ঘন করেছে এবং নতুন প্রতিযোগিতা চালুর জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। একই বছর স্পেনের আদালতও রায় দেয় যে, ফিফা ও উয়েফা মুক্ত প্রতিযোগিতা প্রতিরোধ করছে।
সুপার লিগের প্রথম পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এ২২ স্পোর্টস আরও আধুনিক কাঠামো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির ভিত্তিতে ইউনিফাই লিগ নামে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের দাবি, এই লিগ পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দল নির্বাচন করবে এবং ফুটবলের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
উয়েফা এর আগেও সুপার লিগের নতুন প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা জানায়, ইইউ আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে তারা নতুন বিধিমালা চালু করেছে। তবে ফিফা ও উয়েফার কাছ থেকে এখনো এই নতুন প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন প্রতিযোগিতার প্রস্তাবনা ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ‘ইউনিফাই লিগ’ পরিকল্পনাটি ফিফা ও উয়েফার স্বীকৃতি পেলে এটি চ্যাম্পিয়নস লিগের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কী পদক্ষেপ নেয় এবং সমর্থকদের কাছে নতুন এই লিগ কতটা গ্রহণযোগ্য হয়।