জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট বিভাগ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে বরিশাল বিভাগকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক সিলেট।
শেষ দিনে জয়ের জন্য সিলেটের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১০৫ রান। তবে শুরুতেই ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে দলটি। এমন পরিস্থিতিতে অধিনায়ক অমিত হাসান ও নাসুম আহমেদের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৭৭ রানের পার্টনারশিপ দলকে জয়ের পথে ফিরিয়ে আনে। ৫২ বলে ৪৪ রান করে নাসুম আউট হন জয় থেকে মাত্র ১ রান দূরে থাকতে। অধিনায়ক অমিত হাসান সিঙ্গেল নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন এবং অপরাজিত থাকেন ৬৯ বলে ৩৮ রান করে।
বরিশাল বিভাগ টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ৩০৪ রান সংগ্রহ করেছিল। সিলেটের পেসার রেজা রহমান রাজা ৫ উইকেট নিয়ে বরিশালকে বড় সংগ্রহ গড়তে বাধা দেন। সিলেট জবাবে ৩৪২ রান সংগ্রহ করে প্রথম ইনিংসে ৩৮ রানের লিড নেয়। নবম উইকেটে তোফায়েল আহমেদ (৬৪) ও রেজা রহমান রাজা (৩৫)-এর ৯৪ রানের জুটি ছিল এই লিডের পেছনে বড় ভূমিকা।
বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোর থেমে যায় মাত্র ১৪২ রানে। সিলেটের পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ৪ উইকেট নেন মাত্র ১৮ রানে, আর তোফায়েল আহমেদ পান ৩ উইকেট মাত্র ১৭ রানে। তাদের বোলিং ঝড়ে সিলেট সহজ লক্ষ্য নিয়ে ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়।
ছয় ম্যাচে চার জয় ও দুটি ড্র নিয়ে সিলেটের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৩৭। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকা বিভাগের পয়েন্ট ২৫। জাতীয় লিগে আর একটি রাউন্ড বাকি থাকলেও ঢাকার পক্ষে সিলেটকে টপকানো অসম্ভব হয়ে গেছে।
রংপুর বিভাগ কক্সবাজারে ঢাকা মহানগরের বিপক্ষে জয় থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করছে। এমনকি রংপুর যদি জয়ীও হতো, তবুও সিলেটকে শিরোপার জন্য আরও একটি ম্যাচ অপেক্ষা করতে হতো। তবে রংপুরের জয়ের সম্ভাবনা শেষ হওয়ায় এক ম্যাচ বাকি থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মাতলো সিলেট।
সিলেটের প্রথম শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছেন পেসাররা। রেজা রহমান রাজা, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে আসেন। ব্যাট হাতে অধিনায়ক অমিত হাসান ও অলরাউন্ডার নাসুম আহমেদ দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এই শিরোপা জয় সিলেট বিভাগের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রথমবারের মতো জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সিলেটের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।