ইসরায়েলি নির্মম ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে গাজাবাসী পুরো রমজান মাস রোজা পালনের পর একটুখানি ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে চেয়েছিল। কিন্তু ঈদের দিনেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে, যার ফলে আরও একটি বিষাদময় ঈদ কাটলো ফিলিস্তিনিদের।
রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও গাজাবাসীর ওপর ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এ হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার মাঠ পর্যায়ে থাকা সাংবাদিকরা নিশ্চিত করেছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন শিশু রয়েছে। আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত তিন কন্যাশিশুর হৃদয়বিদারক দৃশ্য ধরা পড়েছে ভিডিও ফুটেজে। যা আল-জাজিরার সানাদ ভেরিফিকেশন ইউনিট দ্বারা যাচাই করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, শিশুগুলো রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং সম্ভবত ঈদ উদযাপনের জন্য নতুন পোশাক পরেছিল তারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে তীব্র বিমান হামলা শুরু করে। এরপর থেকে টানা হামলায় এ পর্যন্ত ৯২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আল-জাজিরা জানিয়েছে, হামলাগুলো গাজার বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরে চালানো হচ্ছে, যেখানে সাধারণ নাগরিকরাই প্রধান শিকার হচ্ছেন।
গাজায় বেঁচে থাকা মানুষগুলো এখন চরম সংকটের মুখে। ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি এবং ওষুধের সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও এবং দ্রুত অবরোধ তুলে নিয়ে ত্রাণ সহায়তা স্বাভাবিক করার আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তা অগ্রাহ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস মিশরের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানালেও ইসরায়েল তা মানছে না। যার ফলে এই মুহূর্তে গাজা আবারও ধ্বংসযজ্ঞের মুখে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।