
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসনে কেন্দ্র ঘোষিত জামায়াতে ইসলামী মনোনীত একক প্রার্থী হিসেবে শামীম সাঈদী নির্বাচনী মাঠে নেতা- কর্মীদের নিয়ে ভোটারদের মন জয় করার প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন খোশ আমেজে, কিন্তু বিএনপি বা জোটের প্রার্থী এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে চূড়ান্ত না হওয়ায় একাধিক প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণা চালালেও আছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে,নেতা-কর্মী সমর্থক- ভোটাররা আছেন অস্বস্তিতে। ফলে বিএনপি’র প্রার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
নেতা-কর্মী ভোটার-সমর্থকরা কেউ কেউ বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার- প্রচারণা চালালেও অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আছেন দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। দল যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষ হয়ে কাজ করবেন। সে হিসেবে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধোঁয়াশা বিরাজ করছে।
পিরোজপুর-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা হলেন –
শামীম সাঈদী : পিরোজপুর- ১ আসনের সাবেক একাধিকবারের সংসদ সদস্য, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সুযোগ্য মেজো পুত্র,সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি জেলা- উপজেলা জামায়াতের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি পিরোজপুর-২(নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়া) আসনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। গেল ৫ আগষ্ট জুলাই দিবস উপলক্ষে তিনি নেছারাবাদ,কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় হাজার হাজার নেতা- কর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে শো-ডাউন করেছেন যা সবার দৃষ্টি কেড়েছে। এছাড়া নেছারাবাদে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য কয়েক হাজার নেতা-কর্মীদের নিয়ে নৌ-র্যালি করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। এছাড়া তিনি রুটিন মাফিক পিরোজপুর-২ আসনের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্বাচনী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গণসংযোগ, সভা- সমাবেশ,কর্মীসভা,ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সমাবেশসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড ও জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এমনকি তার অবর্তমানে জেলা- উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সমানভাবে প্রচারনার ধারা অব্যাহত রেখে নির্বাচনী মাঠ নিজেদের দখলে রেখেছেন।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু : জাতীয় পার্টি (জেপি)এর চেয়ারম্যান,সাবেক একাধিকবারের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে বিভিন্ন অসন্তোষ, ক্ষোভ থাকলেও তার এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা শোনা যাচ্ছে।
আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন : বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর পুত্র ও ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন পিরোজপুর-২ আসনের বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
মাহমুদ হোসেন : বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুর-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ফখরুল আলম : নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ফখরুল আলম পিরোজপুর-২ আসনের বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
জসীমউদ্দীন : কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা জসীমউদ্দীন বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
আহসান কবির : কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান কবির পিরোজপুর-২ আসনের বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ডা.মোস্তাফিজুর রহমান ইরান : লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জোটের প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুর-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এছাড়া এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ,এবি পার্টি,গণ-অধিকার পরিষদ বা অন্য কোন দলের প্রার্থী হিসেবে কেউ আত্মপ্রকাশ বা প্রচার প্রচারণা চালানো শুরু করেননি। উল্লেখ যে, পিরোজপুর-২ আসনের ৩টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট নেছারাবাদে হওয়ায় অত্র উপজেলা বাসীর প্রার্থী বাছাই ও ভোট দানের গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া মোট ভোটারের প্রায় এক- চতুতাংশ হিন্দু ভোটার থাকায় এবং আওয়ামী লীগ থেকে কোন প্রার্থী না থাকায় ভোটারদের মন জোগাতে উল্লেখিত প্রার্থীদের দলীয় ও ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।