সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি দোকানপাট, ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি গ্রামে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া নিয়ে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এই ঘটনা থেকেই দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে পরিস্থিতি শান্ত না হয়ে আরও উত্তপ্ত হয়। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে দুই গ্রামে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার বাজার মোড়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ নতুন করে শুরু হয়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপে অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষের কারণে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কের থানার বাজার এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় ইটের আঘাতে ৫ জন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাসেল বলেন, সংঘর্ষে আহত ৫০ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ জানান, রোববার বিকেল পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষ থামলেও এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। যেকোনো মুহূর্তে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্থানীয় এই বিরোধ দ্রুত সমাধান করা না হলে এটি আরও বড় সংকট সৃষ্টি করতে পারে।