সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। এ প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের কথা পরিষ্কার, এখানে কোনো জাতীয় ঐক্য হবে না।” তবে এনসিপি মনে করছে, বিএনপির এই বক্তব্য তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়।
গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার বিষয়ে এনসিপি এখনো তাদের অবস্থানে অটল রয়েছে। দলটির নেতারা মনে করেন, তারা তাদের বক্তব্য যথাযথভাবে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হলে প্রকৃত গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে।” তিনি আরও জানান, গণপরিষদের সদস্যরা পরবর্তী সময়ে আইনসভায় রূপান্তরিত হলে সাংবিধানিক শূন্যতা বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমস্যা হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচনই হবে সবচেয়ে জরুরি এবং আমাদের অগ্রাধিকার।” তিনি রয়টার্সে প্রকাশিত নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন এবং বলেন, এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্য হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, “আমরা ধরে নিতে পারি, এককভাবে গণপরিষদের বিষয়ে বিএনপির আপত্তি নেই, তবে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একসঙ্গে করতে গেলে তাদের আপত্তি রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সম্ভবত বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের অবস্থান কখনোই ছিল না যে আমরা একই সঙ্গে নির্বাচন চাই। গণপরিষদই পরবর্তীতে আইনসভায় রূপান্তরিত হবে।”
এনসিপি মনে করছে, বিএনপির বক্তব্য এখনো চূড়ান্ত নয়। দলটির নেত্রী সামান্তা শারমিন বলেন, “সালাহ উদ্দিন আহমদের বক্তব্য বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অতীতে বিএনপির বক্তব্য পরিবর্তনের নজির রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তা হতে পারে কি না, তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।”
গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার বিষয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলমান রয়েছে। এনসিপি এখনো তাদের অবস্থানে অনড় থাকলেও বিএনপির প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে, দলটি এখনো এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামীতে এ নিয়ে আরও আলোচনা ও বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।