1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৪:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কাহারোলে কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও পার্টনার কংগ্রেস ২০২৫ ঈদে আসছে ফারহান জোভান ও তটিনীর নাটক ‘তবুও মন’ ভারত থেকে ফেরত ৫৬ বাংলাদেশিকে সীমান্তে পুশ ইন করল বিএসএফ পাটনায় ধর্ষণের শিকার ১০ বছরের শিশুর মৃত্যু, ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ক্ষোভ মে মাসে ২৯৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, শীর্ষে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত শৈলকুপায় শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল সালাহউদ্দিন আহমদের গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা ঝিনাইদহে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাইবার দুর্বৃত্তদের রোষানলে অভিজাত পরিবার দুদকের সাবেক কর্মকর্তা মলয় কুমার সাহার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও প্লাবন, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

ধান চাষে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে এডব্লিউডি সেচ পদ্ধতি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
ধান চাষে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে এডব্লিউডি সেচ পদ্ধতি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক কমলেশ শর্মা গত পাঁচ বছর ধরে তিন একর জমিতে ধান চাষ করছেন। পানিনির্ভর এ ফসলে তিনি প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি অলটারনেট ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রায়িং (AWD) নামক সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করে সেই খরচ কমিয়ে এনেছেন ১০ হাজার টাকায়।

এডব্লিউডি পদ্ধতিতে এক মৌসুমে সেচের সংখ্যা ৭০-৮০ বারের পরিবর্তে এখন ৬০ বারেই সীমাবদ্ধ। এতে পানি ও বিদ্যুৎ উভয়ই সাশ্রয় হচ্ছে। জমিতে জলাবদ্ধতা কমে গিয়ে রোগবালাই কমেছে এবং প্রতি বিঘায় ৫-৭ মণ পর্যন্ত ধানের ফলন বেড়েছে।

কমলেশের মতো কালীগঞ্জ উপজেলার আরও ৬০০ কৃষক এই পদ্ধতির সুফল পাচ্ছেন। স্থানীয় এনজিও সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা শেয়ার দ্য প্ল্যানেট-এর সহযোগিতায় এই প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে।

এই পদ্ধতিতে ১২ ইঞ্চি দীর্ঘ প্লাস্টিক পাইপ ব্যবহার করা হয়, যার ৯ ইঞ্চি পর্যন্ত ছিদ্রযুক্ত। পাইপটি ধানক্ষেতে বসিয়ে ভেতরের মাটি বের করে দিলে ছিদ্র দিয়ে জমিতে পানির উচ্চতা বোঝা যায়। পানির স্তর নির্ধারণ করে কৃষকরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দেন।

সুন্দরপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, এডব্লিউডি ব্যবহারে চারা গজায় বেশি, রোগবালাই কমে এবং বিদ্যুৎ খরচও হ্রাস পায়। একই কথা বলেন কৃষক আব্দুর রশিদ, যিনি বলেন, আগে প্রতিদিন সেচ দিতে হতো, এখন তিন-চার দিন অন্তর দিলেই চলে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) জানায়, বর্তমানে এক কেজি ধান উৎপাদনে ১,৫০০ লিটার পানি লাগে। AWD ব্যবহারে প্রতি কেজিতে ২০০ লিটার পর্যন্ত পানি সাশ্রয় সম্ভব। এতে উৎপাদন খরচ কমে ২০ শতাংশ এবং উৎপাদন বাড়ে ৩-১০ শতাংশ।

ব্রির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহবুবুল আলম বলেন, এক একর জমিতে মাত্র তিনটি পাইপই যথেষ্ট। প্রতিটি পাইপের খরচ ১০০-১৩০ টাকা।

ব্রির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধানক্ষেত থেকে বছরে ১.৩৯–১.৫৬ মিলিয়ন টন মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। AWD পদ্ধতিতে এই নির্গমন ২৫-৩০ শতাংশ কমানো সম্ভব।

ব্রির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ১০ লাখ হেক্টর জমিতে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা গেলে অতিরিক্ত ২ লাখ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

ব্রির সাবেক মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস মনে করেন, এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে সেচ মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা। কৃষককে সারা মৌসুমের জন্য টাকা দিতে হয়, ফলে তারা সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহারেও অনাগ্রহী হন। সরকারকে এমন ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যেখানে ব্যবহৃত পানির পরিমাণ অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ হবে।

ইফাদ (IFAD)-এর রিডিউসিং এগ্রিকালচারাল মিথেন প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশে AWD পদ্ধতির প্রসারে কাজ চলছে। ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ভ্যালানটাইন আচানচো বলেন, এই প্রযুক্তি মিথেন নির্গমন কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করতে সহায়ক হবে। ইফাদ অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে সচেতনতা, সক্ষমতা উন্নয়ন ও নীতিগত সহায়তা দিচ্ছে।

AWD সেচ পদ্ধতি শুধু কৃষকের খরচ কমাচ্ছে না, বরং পানি সাশ্রয় ও জলবায়ু সুরক্ষার দিক থেকেও একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে উঠে এসেছে। সরকারি সহায়তা ও সঠিক নীতিমালার মাধ্যমে এ পদ্ধতির বিস্তার আরও তরান্বিত করা সম্ভব।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট