খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশে এবার বোরো ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক। তিনি জানান, সরকারের লক্ষ্য—বিদেশ থেকে আর চাল আমদানি না করে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই চাহিদা পূরণ করা।
শুক্রবার (২০ জুন) পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্য উপদেষ্টা জানান, বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১৭.৫ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে ৩.৫ লাখ টন ধান, ১৪ লাখ টন চাল।
সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকদের সহায়তা করতে ধানের দাম কেজি প্রতি ৩৬ টাকা এবং চালের দাম ৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৪ টাকা বেশি। ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে ২৪ এপ্রিল থেকে এবং চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
জেলার ভিত্তিতে ধান-চাল সংগ্রহের অগ্রগতি, পটুয়াখালী জেলা: ধান লক্ষ্যমাত্রা: ১,৯২৫ মেট্রিক টন (পুরোটা অর্জিত), চাল লক্ষ্যমাত্রা: ৫,৬৯৫ মেট্রিক টন, ইতোমধ্যে অর্জিত: ৪,৯৯৭ মেট্রিক টন চাল।
বরগুনা জেলা, ধান লক্ষ্যমাত্রা: ৫০০ মেট্রিক টন (পুরোটা অর্জিত), চাল লক্ষ্যমাত্রা: ১,৫১৩ মেট্রিক টন, অর্জিত: ১,৩৪৯ মেট্রিক টন। বরগুনার ৬টি এলএসডি (লোকাল স্টোরেজ ডিপো)-এর ধারণক্ষমতা রয়েছে ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
খাদ্য উপদেষ্টা জানান, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সাশ্রয়ী খাদ্য নিশ্চিত করতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে খাদ্য ভর্তুকি বরাদ্দের প্রস্তাব: ৯,৫০০ কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল: ৮,০৫৯ কোটি টাকা, ওএমএস ও টিসিবির মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম ৫০ লাখ পরিবার থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখ পরিবারে উন্নীত করা হবে। প্রতিটি পরিবার মাসে ৩০ কেজি চাল ১৫ টাকা কেজি দরে পাবে। বর্তমানে এই কর্মসূচি বছরে ৫ মাস চলে, তবে আগামী অর্থবছর থেকে তা ৬ মাসে সম্প্রসারিত হবে। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, “আমরা কখনোই স্থির অবস্থানে থাকতে পারি না। যোগ হচ্ছে, খরচও হচ্ছে। তবে এবারের বোরো ও আমন ভালো হলে আমদানি ছাড়াই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।”
দেশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের অগ্রগতি এবং খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ বৃদ্ধির খবর সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কৃষক, ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকদের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সরকার যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোয়, তাহলে দেশীয় উৎপাদন দিয়েই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।