গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে শহরের পৌরপার্ক এলাকায় অনুষ্ঠিত পদযাত্রা ও সমাবেশে এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর গোটা শহরে চরম উত্তেজনা ও সহিংস পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহত চারজন হলেন— দীপ্ত সাহা (২৫), উদয়ন রোড, গোপালগঞ্জ, রমজান কাজী (১৮), কোটালীপাড়া, সোহেল রানা (৩০), টুঙ্গীপাড়া, ইমন (২৪), গোপালগঞ্জ সদর।
তাদের মরদেহ গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জানিয়েছেন, তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া পুলিশ, সাংবাদিকসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দুপুরে এনসিপির সমাবেশ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে আসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা সমাবেশ মঞ্চে চড়াও হয়ে মাইক, সাউন্ড বক্স, চেয়ার ভাঙচুর এবং এনসিপি নেতাকর্মীদের মারধর করে। এরপর কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
হামলার তীব্রতায় পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। এনসিপির নেতারা পরে আশ্রয় নেন গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। হামলাকারীরা এ সময় পুলিশের গাড়িবহর ও সাধারণ যানবাহনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালায়।
এই কর্মসূচি ছিল “রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের দাবিতে” ঘোষিত জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ। এনসিপির দাবি, এই হামলা গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রকাশ।