পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলায় সরকারের দেওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকলেও কচাঁ ও বলেশ্বর নদীতে প্রকাশ্যে চলছে ইলিশ শিকার। মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর না থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার তিন দিক ঘিরে থাকা কচাঁ ও বলেশ্বর নদীতে বহু জেলে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে ইলিশ ধরতে ব্যস্ত। শুধু নিবন্ধিত জেলেরা নয়, অনিবন্ধিত অনেক ব্যক্তিও নদীতে নেমেছেন মা ইলিশ শিকারে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার সময় সরকার জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা দিলেও অনেকেই সেই সহায়তা পান না। যাঁরা পান, তাও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ফলে পরিবার-পরিজনের খরচ চালাতে জেলেরা বাধ্য হয়ে নদীতে নামছেন।
গত বুধবার রাতে উপজেলার চন্ডিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি ইলিশ ধরার জাল, দুটি কারেন্ট জাল এবং ছয়টি চর গরা জাল জব্দ করা হয়। তবে, জব্দ করা জাল তাৎক্ষণিকভাবে ধ্বংস না করে ট্রলারের মাঝির জিম্মায় রাখার পর দেখা যায়, চারটি জাল গায়েব হয়ে গেছে। পরে শুক্রবার সকালে বাকি জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, রাতের অন্ধকারে জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকার করে গোপনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। অভিযানের সময় নদীতে মৎস্য বিভাগের কোনো উপস্থিতি দেখা যায়নি বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ রহমান বলেন, “আমি দুই দিন ধরে ঢাকায় আছি। এলাকায় ফিরে বিস্তারিত বলতে পারব।”
উল্লেখ্য, সরকার ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে সারাদেশে ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। এ সময়ে মৎস্য অধিদপ্তর দেশের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিলেও ইন্দুরকানীতে সেই নির্দেশনা মানা হয়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের কার্যকর নজরদারি না থাকায় মা ইলিশ ধরা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে আগামী মৌসুমে ইলিশ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।