আগামী মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে উপস্থাপন করা হবে বহুল আলোচিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ২০২৫’। এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতাকে ঢাকায় আনতে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যা বহন করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
রোববার (৩ আগস্ট) জুলাই গণ–অভ্যুত্থান অধিদপ্তর ট্রেন বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠালে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। রেল কর্তৃপক্ষ সেদিনই আটটি বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়ায় এই ট্রেনগুলো চালানো হবে, এবং তা নিয়মিত রেলসেবা ব্যাহত না করে পরিচালিত হবে।
উৎস জেলা | কোচ | আসন | নির্ধারিত ভাড়া |
---|---|---|---|
চট্টগ্রাম | ১৬ | ৮৯২ | ৭,০০,০০০+ টাকা |
জয়দেবপুর (গাজীপুর) | ৮ | ৭৩৬ | ৭২,৫০০ টাকা |
নারায়ণগঞ্জ | ১০ | ৫১০ | ৫৬,৫০০ টাকা |
নরসিংদী | ১২ | ৬৫২ | ৯৫,০০০ টাকা |
সিলেট | ১১ | ৫৪৮ | ৩,২৩,০০০ টাকা |
রাজশাহী | ৭ | ৫৪৮ | ৪,৮৫,০০০ টাকা |
রংপুর | ১৪ | ৬৩৮ | ১০,৫০,০০০ টাকা |
ভাঙা (ফরিদপুর) | ৭ | ৬৭৬ | ২,৬১,০০০ টাকা |
দূরবর্তী অঞ্চল যেমন চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট থেকে ট্রেনগুলো রাত বা ভোরের দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। অন্যদিকে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ফরিদপুর থেকে ট্রেনগুলো দুপুরের আগেই ঢাকায় পৌঁছাবে। সব ট্রেনকে দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে রাজধানীতে পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি শেষে রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ট্রেনগুলো নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যাবে।
এই ট্রেন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হওয়া বিতর্কের জবাবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মতো সরকারের মন্ত্রণালয় থেকেও ট্রেন ভাড়ার অনুরোধ এলে নিয়ম অনুযায়ী আমরা তা অনুমোদন করি। এখানে নিয়মভঙ্গ হয়নি এবং রেল আয়ও করছে।”
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশেষ ট্রেন ভাড়া প্রদানে ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া সংযোজন করা হয় যা রেলওয়ের প্রচলিত নিয়মের অংশ।
এর আগেও একই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ট্রেন ভাড়া নেওয়ার নজির রয়েছে। যেমন ১৯ জুলাই জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর সমাবেশে অংশ নিতে চার জোড়া ট্রেন ভাড়া করেছিল, যার ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৩২ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলও ২০ বগির একটি ট্রেন ভাড়া করেছে, যেখানে ১,১২৬টি আসন রয়েছে।
রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনা কোনো অস্বাভাবিক বা পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপ নয় বরং এটি একটি চলমান রেলসেবার অংশ যা সুনির্দিষ্ট চাহিদা ও নিয়ম মেনেই পরিচালিত হয়ে থাকে।