জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হঠাৎ করে পাঁচজন উপ-কর কমিশনারকে বদলি করেছে। এ বদলির আদেশ রোববার (২২ জুন) জারি হয় এবং সোমবারের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর ও মঙ্গলবারের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলমান রাজস্ব সংস্কার আন্দোলনের পটভূমিতে এই বদলি অনেকের কাছে স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বদলি হওয়া পাঁচ কর্মকর্তার মধ্যে আছেন— শাহ্ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী – আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট থেকে ময়মনসিংহ কর অঞ্চলে বদলি। একইসঙ্গে সিআইসিতে তার উপপরিচালকের সংযুক্তি বাতিল। মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম – ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ থেকে খুলনা কর অঞ্চলে। মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ – এনবিআরের প্রধান কার্যালয় থেকে বগুড়া কর অঞ্চলে। ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল – আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট থেকে কুমিল্লা কর অঞ্চলে। নুশরাত জাহান শমী – কুমিল্লা কর অঞ্চল থেকে রংপুর কর অঞ্চলে।
আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সোমবারের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় সোমবার দুপুর থেকে দাপ্তরিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তরিত গণ্য হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনকারী এক কর্মকর্তা বলেন, “এই বদলি কোনো স্বাভাবিক প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়। এটি চলমান রাজস্ব সংস্কার আন্দোলন দমন করার একটি কুটকৌশলী পরিকল্পনা।”
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচি ঢাকাসহ দেশের সব এনবিআর কার্যালয়ে পালিত হচ্ছে।
গত ১২ মে সরকার এনবিআরকে দুটি ভাগে ভাগ করে— রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ, রাজস্ব নীতি বিভাগ।
এই অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই বিভাজন বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। যদিও অর্থমন্ত্রণালয় আলোচনা করে আশ্বস্ত করেছে, তবুও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে অবস্থান বজায় রেখেছেন।
চলমান রাজস্ব সংস্কার আন্দোলনের মাঝপথে এনবিআরের পাঁচ উপ-কর কমিশনারকে হঠাৎ বদলি করে প্রশাসনিক অস্থিরতা আরও তীব্র করে তুলেছে কর্তৃপক্ষ। সরকার ও এনবিআর চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সামনে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটিই দেখার বিষয়।