বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনায় শুরু হয়েছে টানা মুষলধারে বৃষ্টি। ফলে জেলার প্রধান নদ-নদী—পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালীতে পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন ফেরিঘাট, বিশেষ করে বড়ইতলা ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে। এতে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘাট এলাকার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত মানুষদের বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পাথারঘাটা থেকে বরগুনায় আসা যাত্রী মেহেদী হাসান বলেন, “পাসপোর্টের কাজ থাকায় আমাকে জরুরি ভিত্তিতে বরগুনায় আসতে হয়েছে। কিন্তু পানির উচ্চতা যেভাবে বাড়ছে, তা দেখে ভয় লাগছে। নদীতে যদি একটি ব্রিজ থাকতো, তাহলে আর এ দুর্ভোগে পড়তে হতো না।”
আরেক যাত্রী গোলাম আজাদ বলেন, “প্রতি বছর কোনো না কোনো দুর্যোগে ঘাট এলাকা তলিয়ে যায়। রোগী নিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছানো অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে।”
বড়ইতলা ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মো. আজিজ জানান, “১৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। প্রতি বছরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে দোকানে পানি ঢুকে পড়ে। ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও একই সমস্যায় পড়ি।”
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, “জেলায় এখনও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং ফেরি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।”
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।