জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বাংলাদেশকে ধ্বংসাবশেষ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রবাসীরাই মূল ভূমিকা পালন করেছেন।”
আজ (বুধবার) টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “কঠিন সময়ে দেশের টিকে থাকা সম্ভব হয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কারণেই।”
অধ্যাপক ইউনূস অভিযোগ করে বলেন, “ক্ষমতাচ্যুত সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার এবং ব্যাংক শূন্য করে গিয়েছিল। সেই সংকটকালে প্রবাসীদের সহযোগিতা না পেলে বাংলাদেশ কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারত না।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে ঠিকই, তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতি গঠনে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।”
প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে আরও বেশি করে বিনিয়োগ করুন। একজন নাগরিক হিসেবে দেশের সংস্কারেও আপনাদের দায়িত্ব রয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজন এবং ব্যবসা রয়েছে বাংলাদেশে। ফলে তাদের সঙ্গে দেশের সংযোগ স্বাভাবিকভাবেই মজবুত।” তিনি জাপান প্রবাসীদের জাপান সরকারের ওপর প্রভাব তৈরির চেষ্টা চালানোর কথাও বলেন।
আজ প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেগুলো হলো, ডেভেলপমেন্ট পলিসি লোন: ৪১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা উন্নয়নে), জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়াল গেজ ডাবল লেন রেলওয়ে প্রকল্প: ৬৪১ মিলিয়ন ডলারের ঋণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন স্কলারশিপ অনুদান: ৪.২ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী এবং জাপানের পক্ষে রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা এই দলিলগুলোতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।
দিন শেষে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।