বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজন সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে এই অভিযোগপত্র তুলে দেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
অভিযোগপত্রে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, পুলিশের এসবি শাখার সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম এছাড়াও অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “২০১৫ সালের ১০ মার্চ আমাকে উত্তরার একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেয়। এরপর দীর্ঘ ৬৮ দিন আমি নিখোঁজ ছিলাম। এই ঘটনার জন্য আমি ন্যায়বিচার চাই।” তিনি জানান, মামলার প্রক্রিয়ায় আরও অনেকের নাম উঠে আসবে। তদন্ত সঠিকভাবে হলে গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিচার যেভাবে হবে, আমি তা মেনে নেব। তবে আমি চাই, যারা গুমের সঙ্গে জড়িত, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন হওয়ায় সুবিচার প্রতিষ্ঠা পাবে এবং এটি একটি নজির স্থাপন করবে।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হওয়ার পর সালাহউদ্দিনকে ১১ মে ভারতের শিলংয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। সেখানে অনুপ্রবেশের মামলায় তিনি আটক হন। ২০১৮ সালে ভারতের নিম্ন আদালত ও ২০২৩ সালে আপিল আদালতে খালাস পাওয়ার পর দেশে ফেরার অনুমতি পান।
২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরেন সালাহউদ্দিন। তিনি জানান, দেশে ফেরার পর থেকে তিনি তার গুমের বিচার চান এবং তার মতো অন্য ভুক্তভোগীরাও যেন সুবিচার পান, তা নিশ্চিত করতে চান। বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বলেন, “এটি শুধু বিএনপির প্রতিশ্রুতি নয়, এটি জাতির দাবিও।”