প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। এর আগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
বৈঠকে উভয় নেতা রোহিঙ্গা সংকটের মূল ইস্যুগুলো নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি, কক্সবাজারে অবস্থানরত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ নতুন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যা সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন একটি কার্যকর রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে এবং আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি তহবিল সংগ্রহে সহায়ক হবে।
ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সম্প্রতি কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনের প্রশংসা করেন, যেখানে প্রথমবার রোহিঙ্গা নেতারা সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশকে বৈশ্বিক শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বাড়িয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ইউএনএইচসিআর প্রধানকে জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের আগে তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
এই সম্মেলনকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে আরও গতিশীল করবে।