সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকার কামারপাড়ায় সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসকে যৌথ বাহিনী আটক করেছে। আজ রোববার দুপুরে নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়। আটক করার কারণ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আবদুল লতিফ বিশ্বাসকে যৌথ বাহিনী আটক করেছে। বর্তমানে তাঁকে জেলা সদরে যৌথ বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে কী কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তাঁর বাড়িতে এখনো যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। আমার জানামতে, বেলকুচি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।’
আটকের আগের দিন, গতকাল শনিবার রাতে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর দরবার শরিফে এক হামলার শিকার হন আবদুল লতিফ বিশ্বাস।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তিনি রাত নয়টার দিকে এনায়েতপুর গ্রামে খাজা ইউনুস আলী (রহ.) দরবার শরিফে ১১০তম ওরস শরিফে অংশ নিতে গেলে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারী তাঁর গাড়ি প্রতিরোধ করে। এ সময় পাথর ছোড়ায় গাড়ির একটি গ্লাস ভেঙে যায়। পরে দরবার শরিফের নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তিনি কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন।
এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানি বলেন, ‘আমরা লতিফ বিশ্বাসের ওপর হামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে বিস্তারিত বলতে পারছি না। এই থানায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।’
আবদুল লতিফ বিশ্বাস সিরাজগঞ্জের বেলকুচি-চৌহালি আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ, ২০২4 সালের ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থীর কাছে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এর পর থেকেই তিনি নিজ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লতিফ বিশ্বাস বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে প্রতিপক্ষের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। আটকের ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসকে আটকের ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর আটকের পেছনে কোনো বিশেষ কারণ থাকতে পারে। তবে যৌথ বাহিনী কিংবা স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি।