
পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও ইন্দুরকানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আবুল কালাম আজাদ (ইমরান)-এর নামে থাকা জমি, ফ্ল্যাট, দোকান ও ভবনসহ একাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁর দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করেন উপ-সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম মিন্টু। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ৮৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে। দুদকের আশঙ্কা, অভিযুক্ত ব্যক্তি যেকোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন অথবা তাঁর নামে থাকা সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করতে পারেন, যা তদন্তে বাধা সৃষ্টি করবে।
আদালতের নির্দেশে জব্দ করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে— নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার দেউলপাড়া মৌজার ৬ শতাংশ জমি ও একটি চারতলা ভবন, ঢাকার নিউ বেইলি রোডের একটি ফ্ল্যাট, খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার দুটি জমি, ঢাকার দক্ষিণ চামেলিবাগের একটি দোকান, এবং মাতুয়াইলের ২১ শতাংশ জমি।
দুদক জানায়, শেখ আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ৮৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি মামলা ইতিমধ্যেই দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শেখ আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল কালাম আজাদ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরবলেশ্বর গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে। তাঁর পিতা পেশায় ছিলেন একজন নৌকার মাঝি। আওয়ামী লীগে যোগদানের পর আজাদ রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ২০১৬ সালে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ সময়ের মধ্যেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান এবং এলাকায় “দুর্নীতিবাজ নেতা” হিসেবে পরিচিতি পান।
এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, এবং বিষয়টি স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।