ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ছোট ভাই মোহাব্বত আলী (৬০) নিহতের পর এবার তারই আপন সহোদর বড় ভাই ইউনুচ আলীও (৬৩) মারা গেছেন। বুধবার ভোরে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে ১লা জুন সকালে প্রতিপক্ষদের হামলায় জখম ছোট ভাই মহব্বত আলীকে আশংকাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেলে নেবার পর মারা যান। ওই সময়ে ভাইকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়েই জখম হয়ে যশোরে চিকিৎসাধীন ছিলেন ইউনুচ আলী। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষে একই পরিবারের দুই সহোদরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। নিহতরা বিএনপির কর্মী বলে জানা গেছে। এছাড়াও ওই সংঘর্ষে আহত আরো ৪ জন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন। নিহত মহব্বত আলী ও ইউনুচ আলী উপজেলার জামাল ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হবিবার রহমান এর ছেলে। উল্লেখ্য, গত ১লা জুন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার জামাল ইউনিয়নের তালিয়ান নাকোবাড়িয়া গ্রামে বিএনপির দু’পক্ষের মারামারিতে এ পর্যন্ত দু’জন নিহত সহ ৫/৬ জন আহতের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে একাধিক বাড়ীঘর ভাংচুরসহ লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ বুধবার সকালে ২য় ব্যাক্তির মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়াতে নতুন করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম তাদের টহল জোরদার করেছে। তবে, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে এলাকায় আরো সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে সাধারন মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, ঘটনার পর থেকে থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে দু’গ্রুপের মারামারিতে নিহতের ঘটনায় গত মঙ্গলবার কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের ছেলে ইনামুল হক বাদী হয়ে ৫৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনকে আসামী করে। এ মামলায় কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ডাঃ নুরুল ইসলাম সহ একাধিক বিএনপির কর্মীদের নাম দেওয়ায় তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে শহরে মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে বিএনপির একাংশ। মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভাতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী দোসরদের নিয়ে একটি গোষ্টি বিএনপিকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে। তাদের সিনিয়র নেতা ডাঃ নুরুল ইসলাম সহ অনেক নিরপরাধ কর্মীকে মামলায় জয়িয়েছে। তারা অবিলম্বে ওই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, মারামারিতে এ পর্যন্ত দু’জনের প্রানহানীসহ কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় একটি এজাহার পেয়েছেন। ঘটনার পর থেকে
এখন পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় পরিস্থিতি পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম টহল অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান তিনি।