
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫১ হাজার ৯৯২ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
৭ অক্টোবর ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম রিপন ও সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়। অভিযোগের আওতাভুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সাবেক সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. রজব আলী মন্টু, কোষাধ্যক্ষ মো. বাবুল আক্তার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ।
তদন্তে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলায় প্রাথমিকভাবে তাদের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ওই চার নেতা ইউনিয়ন ছেড়ে পালিয়ে যান। এতে সংগঠন পরিচালনায় সংকট সৃষ্টি হয়। পরে ১৪ আগস্ট বিশেষ সাধারণ সভা ডেকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন ও আর্থিক অনিয়ম অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে। এরপর ২৮ আগস্ট অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মো. রাশিদুল আলম খোকনের সভাপতিত্বে এক সভায় ছয় সদস্যের অডিট কমিটি গঠন করা হয়।
অডিট কমিটি ২০১৯ সালের ১ মে থেকে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ৩২ লাখ টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পায়। একই সঙ্গে ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে আরও ১ কোটি ৪৫ লাখ ৫১ হাজার ৯৯২ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে আত্মসাতের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫১ হাজার ৯৯২ টাকা। এ অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য অভিযুক্তদের তিনবার লিখিত নোটিশ দেওয়া হলেও তারা টাকা জমা দেননি বলে উল্লেখ করা হয়।
অভিযুক্ত সাবেক সাধারণ সম্পাদক রজব আলী মন্টু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তদন্ত কমিটির বরাতে যেভাবে টাকা আত্মসাতের কথা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া। আমরা দায়িত্বে থাকাকালীন কোনো অর্থ আত্মসাৎ করিনি। আমাদের সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।”
বর্তমান কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে বিষয়টি এখন আইনি প্রক্রিয়ায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।